Header Ads

ওমিক্রনের সাইড এফেক্ট ।

ওমিক্রনের সাইড এফেক্ট 
এবার ওমিক্রন !! ডেল্টাপ্লাসের ছোট ভাই । সক্কাল সক্কাল অফিসে গিয়ে শুনলাম ফিফটি পার্সেন্ট আটেনডেন্স । ব্যাস মনটা আবার ফুরফুরে হয়ে গেল । ছুটির পর আনন্দে মোয়া আর নলেনগুড় নিয়ে বাড়ি ফিরছি হটাৎ আগের লকডাউনের ডাই বাসন গুলো চোখের সামনে ভেসে উঠলো । বাড়ি গিয়ে আবার ..... 
ওরে বাব্বা ...
আবার ঘুরে অফিসের দিকে ছুটতে যাবো ...
মাথায় একটা প্ল্যান খেটে গেল । পায়ের আঙুলে লাল ওষুধ আর ব্যান্ডেজ লাগিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বাড়ি ঢুকলুম । মনে মনে ভাবলুম শালা পা কেটে ফেলবো তবু বাসন মাজবো না ।  বাড়িতে ঢুকতেই গিন্নি মেয়ে ছুটে এলো । জিজ্ঞাসা করতেই ফস করে বলে ফেললাম পায়ের ওপর দিয়ে লরি চলে গেছে । গিন্নি মূর্ছা যাবার উপক্রম । বুঝেই ফেলেছি একটু ওভার ডোজ হয়ে গেছে । পড়িমরি অতবড় শরীরটাকে ধরে বললাম আরে আরে দূর দিয়েই গেছে শুধু ওপরে থাকা রডে পায়ের নখ তুলে দিল । 

বেশ আরাম করে পরেরদিন শুয়ে শুয়ে কাটালুম । মুখের কাছে চা , পকড়া,  জলখাবার সব চলে আসছে আর মেয়ে থেকে থেকে জ্বর দেখে যাচ্ছে । দুপুরে ডিমের ডেভিল , মুরগির মাংস খেয়ে মনটা বাইরে বেরোনোর জন্য আকুপাকু করছিল । 
শখ করে বললাম একটু নীচে হেঁটে আসি ...
ওমনি রে রে করে উঠলো দুজনে ...
অনেক কাকুতি মিনতি করতে বললো লিফটে ফ্ল্যাটের নীচে গিয়ে ওপরে চলে আসতে । 
তথাস্তু !! বলেই আবেগে হুড়মুড়িয়ে নামতে গিয়েই ...একটু লেংচে নিলাম । ঠিক সেই সময় গিন্নি বল্লো নীচে যখন যাচ্ছ 20টা ডিম এনো তো ওই ফ্ল্যাটের নিচের দোকান থেকে । মেজাজ একটু খিঁচিয়ে গেল বটে তবে বাসনটা'র দিকে তাকিয়ে নমস্কার করে ঠিক আছে বস... বলে বেরিয়ে গেলুম । 

ফ্ল্যাটের নীচে পান বিড়ির দোকানটা করোনা'র 
সময় থেকে বেশ চলছে । আর একটু ফুকে নেবার সুবাদে বেশ ভাব আমার সাথে । নেপলা, বেশ চৌকস ছেলে । সব দিকে নজর । অনেক অজানা রসালো খবর'ও দেয় । 
বেশ কিছুক্ষণ পরে একটা সুন্দরী মহিলা দোকানের দিকে আসছে দেখে মাস্কটা ভালোভাবে পরে নিলুম । 
চোখ পড়তেই দেখি আমায় কি ইশারা করছে । আমার শরীরের ভিতর দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল । মনে মনে বল্লাম এই পেট রোগা সরকারি ক্লার্ক'কে এতদিনে তাহলে কেউ চিনলো । কিন্তু আমি কি সত্যিই..ইই দেখছি । মানে আমাকেই ...ধুর ছাতা মাস্কটা'র জন্য মুখটাও ভালোভাবে দেখা গেল না । তবে চোখ আর ফিগারটা বেশ !! 
হ্যা রে নেপলা ইনি কে রে !! 
দাদা থার্ড ফ্লোর সাউথ ব্লকে থাকেন । আপনাকে সিগনাল দিচ্ছে দাদা । রোজ দেখি অনেক বান্ধবীদের সাথে হা হা হি হি করতে করতে ফেরে !! লেগে থাকুন দাদা !! আমি আছি দাদা !!
সে তো বুঝলুম ! কিন্তু থার্ড ফ্লোরে তো আমিও থাকি !! তবু এনাকে চিনতে পারলুম না !! ছিঃ । এ আমার নয় পুরুষ জাতির লজ্জা । বলতে বলতেই ভদ্রমহিলা পাশের দোকান থেকে কিছু কিনে আমার দিকে আবার সিগন্যাল দিতে দিতে চলে গেল । 

বেশ সময় হয়ে গেছে । বাড়িতে দক্ষযজ্ঞ বেধে যাবার আশঙ্কা নিয়ে ঘরে ঢুকলাম । ঢুকতেই শুরু করে দিলেন মহারানী ....
তোমার কি ব্যাপার বলো তো ! অতবার ধরে ডাকলুম যেন চিনতেই পারলে না । দুঘন্টা হয়ে গেছে গেছো । যতবার আমি তোমায় ডাকছি ততবার ফেল ফেল করে কি দেখছিলে বলো তো । ডিম এনেছো !! বা বাবা বা .. তা আনবে কেন !! ওই লম্পট ছেলেটার সাথে গল্পে মশগুল হয়ে গেলেন উনি !! 
হটাৎ সম্ব্বিত ফিরে এলো ! ইইস ছিঃ ছিঃ শেষে কিনা নিজের বউকে চিনতে পারলুম না !! একদম পচা শামুকে পা কেটে গেল গা ...
তবে কাজের লোক চলে যাবার পর ওর চেহারাটা বেশ খোলতাই হয়েছে । আসলে নিজের বলে চোখে পড়ে নি অনেকদিন । নীল কুর্তিতে বেশ লাগছিলো কিন্তু । 
ভালো করে দেখাই হয় না এখন । আর এর জন্য কতো কি না করেছি কলেজে । মারপিট করে সিনেমার টিকিট কাটা , টাকা দিয়ে গুন্ডা লাগিয়ে তাদেরই মেরে ধমকে কান ধরে ওঠবস করিয়ে ক্ষমা চাওয়া'নো । 
পরে অবশ্য ধরা পরে গিয়ে অরিজিনাল মস্তান দিয়ে পেদানিও খাইয়েছিল । 
পরে নিজেই মলম লাগাতে এসেছিল !!
তখনই বুঝেছিলাম প্রেম পেকে গেছে ...
আবার মনটা কেমন কেমন করছে । কাছে গিয়ে বল্লাম রুমা ....তোমায় আজ খুব সুন্দর দেখাচ্ছে ...
রুমা হেসে বল্লো দুস্টু কোথাকার ...
বলেই আমার হাতে ক্রচ বাইট ধরিয়ে দিয়ে বল্লো ...
এ কটা বাসন একটু মেজে দেবে সোনা ...তার..পর ..
হেসে চলে গেল ...
আমিও সপাসপ বাসন মাজতে লাগলাম । যেন কাল ভৈরব ভর করেছে আমায় । বাসন মাজায় এতো আনন্দ সত্যিই বলছি আগে জানতাম না ।।



 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.